নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কুন্ডিশপাড়া নেছার মায়ের পোল থেকে লোহার পোল পর্যন্ত ২কিলোমিটার খাল খননের পর খালের দক্ষিণ পাড়ের স্তুুপকৃত মাটি গত ১৫/১৬ দিন থেকে বিক্রির জমজমাট ব্যবসা চলছে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন নবনির্বাচিত ইউ.পি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাহার ও তার কর্মীরা।
স্থানীয়রা জনান, প্রতিদিন ১০/১২টি পিকাপে করে এই মাটি বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই মাটি কোথায় নেওয়া হচ্ছে খাল পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, চেয়ারম্যানের কর্মীরা মাটি নিতে আসলে তারা বলেন এই মাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, খালটির খনন কাজ শেষ হওয়ার পর গত ১৫/১৬দিন থেকে প্রতিদিন পিকাপে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নেছার মায়ের পোল এবং লোহার পোল ২প্রান্তেই ভেকো মেশিনের মাধ্যমে পিকাপে মাটি তোলা হচ্ছে এবং একটার পর একটা পিকাপে মাটি তোলার বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়িতে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে লাখ-লাখ টাকার মাটির বিক্রির প্রমান পাওয়া গেছে। এবং এই মাটি চাটখিলের সীমানা ছাড়িয়ে ল²ীপুরেও বিক্রি করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় কুন্ডিশপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল বাশার সোহাগ, জাহাঙ্গীর, নুর মোহাম্মদ সহ আরো বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষকরা জানান, খাল খননের কারণে ভেকো মেশিনের ব্যবহারের ফলে খননকৃত মাটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখার কারণে তাদের রোপনকৃত ইরি, বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তীতে ওই স্তুপকৃত মাটিতে তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শাক সবজি চাষাবাদ করে। এমতাবস্থায় এসব মাটি বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রতিদিন পিকাপে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এতে করে তারা আবারো ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গরিব কৃষক নুর মোহাম্মদ জানান, তার ৪ছেলে খালপাড়ে তার অল্প একটু জমি ছিল। ওই জমির স্তুপকৃত মাটিতে তিনি ছেলেদের জন্য একটি বসত ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করে কিন্তু এই মাটিগুলো তারা নিয়ে যেতে চাইলে তিনি বাধা দেন। পরবর্তীতে তিনি ৮হাজার টাকা দিয়ে ঐ মাটি কিনে নেন। চাটখিল উপজেলার সীমানা সংলগ্ন উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের ঘনেশ শামপুর কোরাইর বাড়ির সেলিনা আক্তার জানান, ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ (বাহার) এর লোক ইউসুফ হোসেন রাব্বির সাথে ১লাখ ১৫হাজার টাকার চুক্তিতে খাল খননের মাটিতে তিনি তাদের পুকুর ভরাট করেন। কুন্ডিশপাড়া মোল্লা বাড়ির আবদুর রব জানান, তার ছেলে ১লাখ ৩৫হাজার টাকা চুক্তিতে চেয়ারম্যানের লোক শাহ আলমের মাধ্যমে তার পুকুর ভরাট করেন। একই বাড়ির মনোয়ারা বেগম জানান, তিনি তার নিচু জমিতে পিকাপ প্রতি ১১শত টাকা চুক্তিতে ২০ পিকাপ মাটি কিনে নিয়েছেন। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাহার তার কর্মী ও নিজস্ব লোকজন দ্বারা এই মাটির ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে আসছেন।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাহারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মাটি বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ খরচে এ মাটি নিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম মোসার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম মোতাবেক রেজুলেশনের মাধ্যমে এসব মাটি স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ জনকল্যাণ মূলক প্রতিষ্ঠান নিজ খরচে নিতে পারেন। এই বিষয়ে একই কথা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জামিল আহমেদ। তিনি আরো বলেন, সরকারি খালের এই মাটি বিক্রয় করতে হলে নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করতে হয়। রামনারায়নপুর থেকে যারা অবৈধভাবে মাটি বিক্রয় করছে তাদরে বিরুদ্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এই ব্যাপারে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
причём
Видео
лупу и бриггс смотреть онлайн
site