আজ- সোমবার, ৮ই জুলাই, ২০২৪ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১     

 আজ -সোমবার, ৮ই জুলাই, ২০২৪  | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ | ১লা মহর্‌রম, ১৪৪৬                                                   সন্ধ্যা ৭:১৪ - মিনিট |

 

Homeঅর্থ ও বাণিজ্যবেশি আর্থিক ক্ষতি হবে এশিয়ার

বেশি আর্থিক ক্ষতি হবে এশিয়ার

২০২২ সালের জুনের মধ্যে যেসব দেশে ৬০ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে না, সেসব দেশের সম্মিলিত আর্থিক ক্ষতি হবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার।

করোনার টিকাদানে ধীরগতির কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে যেসব দেশ ৬০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারবে না, চার বছরে সেসব দেশের সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৯ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা (১৯.৭৮ ট্রিলিয়ন)। এ অর্থ ফ্রান্সের এক বছরের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির সমান। অর্থনৈতিক এ ক্ষতির দুই তৃতীয়াংশ হবে বিশ্বের উদীয়মান দেশগুলোর।

দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বেশি সংখ্যক মানুষকে করোনার টিকা দিতে না পারার কারণে সারা বিশ্বের আর্থিক যে ক্ষতি হবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়া মহাদেশ। এ মহাদেশের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। তবে জিডিপির বিবেচনায় হিসাব করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের, ২০২২-২৫ সালে জিডিপির ৩ শতাংশ।

ইকোনমিন্ট ইন্টেলিজেন্স অর্থনৈতিক ক্ষতির যে হিসাব করেছে সেখানে কিছু বিষয় বাদ পড়েছে। যেমন– করোনার বিধিনিষেধে স্কুল বন্ধ থাকার কী প্রভাব পড়েছে, তা পরিমাপ করা হয়নি। আবার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দূরশিক্ষণ বা অনলাইন ক্লাসের বিশেষ সুযোগ নেই, ফলে স্কুল বা বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ক্ষতি অনলাইন ক্লাস দিয়ে পুষিয়ে নেওয়ার উপায় তাদের ছিল না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকা বৈষম্যের কারণে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যবধান আরও বাড়বে।

করোনা সংক্রমণ শুরুর পর খুবই দ্রুততম সময়ের মধ্যে উদ্ভাবিত হয়েছে টিকা। মহামারির এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই টিকাদান শুরু করে উন্নত দেশগুলো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় চলে এসেছে। কিন্তু সব দেশে টিকাদানের গতি এক নয়। এ কারণেই টিকাদানে পিছিয়ে থাকা দেশগুলো অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে, আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটার তথ্যানুসারে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেখানে ৯৪ শতাংশ অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন, সেখানে তানজানিয়ায় টিকা পেয়েছেন মাত্র শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ মানুষ। নাইজেরিয়ায় টিকা পেয়েছেন ২ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ ও ইথিওপিয়ায় টিকা পেয়েছেন ২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট অর্থনৈতিক মডেলিংয়ের মাধ্যমে দেখিয়েছে, যেসব দেশ ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ৬০ শতাংশের কম মানুষকে টিকা দেবে, ২০২২-২৫ সালের মধ্যে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার।

ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে টিকা প্রাপ্তির এই ব্যবধান কখনো ঘুচবে বলে মনে করার বিশেষ কারণ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গঠিত কোভ্যাক্সের মাধ্যমে গরিব দেশগুলো টিকা পাবে এমন আশা সৃষ্টি হয়েছিল, পরিমাণে কম হলেও। কিন্তু সেই আশাও তারা পূরণ করতে পারেনি। এই কোভ্যাক্স থেকে উন্নত দেশগুলোর এ বছর ১৯০ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্স থেকে বিশ্বের সব দেশকে যে টিকা সরবরাহ করা হয়েছে, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে। যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো উন্নত দেশও কোভ্যাক্সের কাছ থেকে টিকা নিচ্ছে। গত জুন মাসে যুক্তরাজ্য কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ডোজ টিকা নিয়েছে। সেই মাসে আফ্রিকা অর্ধেকের মতো কোভ্যাক্সের টিকা পেয়েছে। এতে কোভ্যাক্স আরও চাপের মুখে পড়েছে।

ধনী দেশগুলো এত দিন কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, তারা কত টিকা দেবে। কিন্তু সেই অঙ্গীকারও তারা রাখতে পারেনি। ২০২২ সালের মধ্যভাগের মধ্যে যুক্তরাজ্য যে ১০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল, তার মাত্র ১০ শতাংশ এখন পর্যন্ত দিয়েছে।

এই বাস্তবতায় গরিব দেশগুলোর টিকা পাওয়ার আশা আরও কমে যাচ্ছে; কারণ, উন্নত দেশগুলোর এখন শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করেছে।

রিলেটেড আর্টিকেল

18 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ

রিসেন্ট কমেন্টস